বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক কিছু নীতিমালা আছে। বিশেষ করে ইন্টারনেট ব্যবহারের একটি পারিবারিক নীতিমালা অবশ্যই থাকা জরুরি। যেমন দিনের নির্দিষ্ট সময়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করা, কম্পিউটার, ট্যাব, মুঠোফোন প্রকাশ্য স্থানে ব্যবহার করা, দরজা আটকে এগুলো ব্যবহার করতে নিরুৎসাহিত করা, বাথরুমে মুঠোফোন নিয়ে যেতে না দেওয়া। পরিবারের কোন সদস্য পর্নো আসক্তি হলে যেভাবে বুঝবেন:
>>অনেক সময় পর্নো দেখে মনের উৎকণ্ঠা, অস্বস্তি আর বিষণ্নতা কমানোর অভ্যাস তৈরি হতে থাকে।
>>আবেগের বহিঃপ্রকাশ আর আচরণের কিছু পরিবর্তন হতে পারে। ক্রমাগত মিথ্যা বলার অভ্যাস তৈরি হয়, আগ্রাসী আচরণ বেড়ে যায়।
>>নিয়মিতভাবে এবং অতিরিক্ত হারে পর্নো সাইট ভিজিট করা, উত্তেজক ভিডিও, ছবি দেখা বা কাহিনি পড়া।
>> ল্যাপটপ বা মুঠোফোন সব সময় অন্যের কাছ থেকে আড়াল করে ব্যবহার করা। কখনো দেখা যায় বাথরুমেও মুঠোফোন নিয়ে প্রবেশ করছে।
>>অনেক সময় দেখা যায় পরিবারের কোনো সদস্য কাছাকাছি গেলে সে কম্পিউটারের পর্দা পরিবর্তন করে ফেলছে, সার্চ হিস্ট্রি মুছে ফেলছে ইত্যাদি। তার মুঠোফোন বা কম্পিউটারে সঞ্চিত উত্তেজক ভিডিও বা চিত্র পাওয়া যাচ্ছে।
>>পর্নো দেখার ক্ষতিকারক দিকগুলো জানা সত্ত্বেও বা এ ধরনের ক্ষতির মুখোমুখি হলেও পর্নো দেখার অভ্যাস পরিত্যাগ করতে না পারা।
>>অনেক সময় পর্নোগ্রাফি দেখে অতিরিক্ত হস্তমৈথুন করার অভ্যাস তৈরি হয়, যা পরে নানাবিধ শারীরিক ও মানসিক সমস্যার কারণ।
>>পর্নো আসক্তির কারণে স্বাভাবিক যৌনজীবন ব্যাহত হয়। সঙ্গী বা সঙ্গিনীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক বাধাগ্রস্ত হতে থাকে।
>> প্রতিদিনের একটি উল্লেখযোগ্য সময় উত্তেজক ভিডিও, ছবি, কাহিনি দেখে ব্যয় করে। এই সময় ব্যয়ের কারণে দৈনন্দিন কাজগুলো ব্যাহত হয় এবং পড়ালেখা বা অন্যান্য কাজের মান কমে যায়। বাড়িতে একা থাকতে চায়, সামাজিক অনুষ্ঠানে যেতে উৎসাহবোধ করে না।
>> দিনে দিনে সহ্যসীমা (টলারেন্স) বাড়তে থাকে। বিষয়ে আগের চেয়ে বেশি বেশি সময় ব্যয় হতে থাকে এবং পর্নো দেখে তৃপ্ত হতে আগের চেয়ে বেশি সময় নেয়। আগের চেয়ে বেশি উত্তেজক এবং বিকৃত ধরনের পর্নো দেখার প্রবণতা তৈরি হয়।
পর্নো আসক্তি থেকে বাঁচার উপায়
মনোবিদদের পরামর্শ হলো, পর্নো আসক্তি থেকে বাঁচতে সাইকোথেরাপি, কাউন্সেলিং, মোটিভেশনাল ইন্টারভিউইং খুব জরুরি। এছাড়া মাইন্ডফুলনেসসহ ওষুধেরও প্রয়োজন হতে পারে। মেডিটেশন, রিলাক্সেশন ইত্যাদির চর্চাও কমিয়ে দিতে পারে পারে পর্নো আসক্তি। নিজ চেষ্টায় এই আসক্তি থেকে বাঁচতে না পারলে মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।